অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা নিজেদের “সেফ এক্সিট” নিয়ে ভাবছেন- এটা অস্বাভাবিক নয়, বরং বাস্তবতার প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তবে এ বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের ময়মনসিংহ মহানগরের নেতাকর্মীরা।
দুদু বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ কেউ সেফ এক্সিটের চিন্তা করছেন, এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। কারণ, দেশে যে অস্থির রাজনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে, তা থেকে নিরাপদভাবে বেরিয়ে আসার চিন্তা করা কোনো অপরাধ নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত দেশে একটি গ্রহণযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এখনো দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে, তাই বিভক্তি নয়, ঐক্যই এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে জুলাই সনদে যে স্বাক্ষর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সেটির মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাবে বলে আমরা আশাবাদী। দেশের মানুষও এখন একটা স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ রাজনীতির প্রত্যাশায় আছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের জন্য যে লড়াই করছি, তা কারও বিরুদ্ধে নয়, বরং জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। আজ যারা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন, তারা নিশ্চয়ই জানেন, তাদের দায়িত্ব সাময়িক। তাই তারা ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিয়ে ভাববেন, এটা খুবই স্বাভাবিক।’
দুদু বলেন, ‘আমরা চাই, এই অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক, যাতে দেশের মানুষ তাদের প্রকৃত প্রতিনিধিকে ভোটের মাধ্যমে বেছে নিতে পারে। বিএনপি সবসময়ই একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘যারা দীর্ঘদিন দেশকে দুঃশাসন, ভয় ও নির্যাতনের মধ্যে রেখেছিল, তাদের বিচার এখন সময়ের দাবি। আমাদের লক্ষ্য প্রতিশোধ নয়, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। দেশের মানুষ এখন এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছে, যেখানে তারা আর মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে বিভ্রান্ত হবে না।’
এ সময় তিনি উপদেষ্টাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যদি সত্যিই তারা সেফ এক্সিট নিয়ে ভাবেন, তবে তা যেন হয় জনগণের কল্যাণের চিন্তা থেকে, নিজের নিরাপত্তা নয়। কারণ, এই জাতি এখন একটি সৎ নেতৃত্ব ও সত্যিকারের পরিবর্তনের অপেক্ষায়।’ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান, ময়মনসিংহ মহানগর তাঁতীদলের আহ্বায়ক ডা. জাহাঙ্গীর আলম ও সদস্য সচিব আনোয়ার পারভেজ। তারা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন।
সকালবেলা/এমএইচ