
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রস্তাবিত প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নয়, বরং এটি কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবি থেকেই এসেছে। তিনি স্পষ্ট করে উল্লেখ করেন যে, এই পিআর পদ্ধতি জনগণের চাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তিনি বলেন, সাধারণ জনগণ চায় তাদের প্রতিনিধি সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। তারা পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায় না। এটি দেশের গণতান্ত্রিক চেতনার সঙ্গে পুরোপুরি অমিল পূর্ণ। ‘জনগণ সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায় এবং এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মূল ভিত্তি।’
রোববার (১২ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট আয়োজিত এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এই মত প্রকাশ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৫ বছর পর আমরা এক ফ্যাসিস্ট শাসনকে সরিয়ে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম, যেন তিনি দ্রুত একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনেন। তিনি সেই দায়িত্ব পালন করেছেন, সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন এবং নতুন কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছেন।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আগামী ১৭ অক্টোবর এই প্রস্তাবিত সংস্কার পদক্ষেপগুলোতে স্বাক্ষর হওয়ার কথা। এই প্রক্রিয়া দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে আরও স্বচ্ছ ও স্থিতিশীল করতে সহায়তা করবে। এছাড়া, তিনি বলছেন যে, বিএনপি সবসময়ই সংস্কারের পক্ষে ছিল। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে, দাবি করছে যে বিএনপি সংস্কার চায় না। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বিএনপি নিজেই বাংলাদেশের সংস্কার আন্দোলনের ফসল। তিনি বলেন, ‘কিছু রাজনৈতিক দল বিএনপিকে নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আমরা চাই জনগণ সরাসরি ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করুক এবং দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হোক।’
তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, বিএনপি দ্রুত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার পক্ষে, এবং জনগণ এখনই নির্বাচন চায়। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে দেশকে নতুন করে জাগিয়ে তোলার এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ আমরা হারাতে চাই না।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশের জনগণ যাতে তাদের ভোটাধিকার যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের প্রধান সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।
তিনি জানান, এই ধরনের আলোচনা ও সমাবেশ দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে এবং জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করে।
মির্জা ফখরুলের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, তিনি মনে করেন, পিআর পদ্ধতির পরিবর্তে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধির নির্বাচন করা জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে এবং এটি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে মজবুত করে। এছাড়া, তিনি রাজনৈতিক বিভ্রান্তি ও ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে এবং নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করতে জোর দিয়েছেন।
সকালবেলা/এমএইচ